বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের প্রথম দিনে রাজধানীতে যান চলাচল অনেকটা কম। তবে কর্মদিবস হওয়ায় রয়েছে মানুষের চলাফেরা। ফলে সকালবেলা যানবাহন পেতে মানুষকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেকেই কাঙ্ক্ষিত যানবাহন না পেয়ে পড়েছেন ভোগান্তিতে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, পল্টন ও মতিঝিল এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। একই সঙ্গে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসব মোড়ে সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের।
রামপুরায় দেখা গেছে, গুলিস্তান-সদরঘাটমুখী আকাশ বা ভিক্টর পরিবহনের জন্য অনেকেই অপেক্ষা করছেন বাস স্টপেজে। তবে এসব পরিবহনের বাসের সংখ্যা আজ বেশ কম। দীর্ঘক্ষণ পর পর দু-একটি বাস এলেও তা আগে থেকেই যাত্রীতে পূর্ণ। এরমধ্যে অনেকেই হুড়োহুড়ি করে ওঠার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন বারবার।
রামপুরার মতো অন্যান্য বাস স্টপেজগুলোতেও মানুষের আনাগোনা ছিল বেশি। ফলে নির্ধারিত সময় অফিসে পৌঁছাতে অনেকেই বিকল্প হিসেবে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল করছেন। আবার অনেককে বাধ্য হয়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হতে দেখা গেছে।
সড়কগুলোতে বাস, মিনিবাস, লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, পণ্যবাহী ট্রাক, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার চলাচল করতে দেখা গেছে, তবে সংখ্যায় কম। এ কারণেই ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকতা ফুয়াদ বলেন, হরতাল-অবরোধ যাই হোক, অফিস করতে হবে। অবরোধে অফিস বন্ধ থাকে না। এখন গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি। না পেলে পাঠাও নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সময় মতো অফিসে পৌঁছাতে হবে।
তিনি বলেন, অনেকদিন তো হরতাল-অবরোধের মধ্যেই কাটলো। বিষয়টি এখন গা-সওয়া হয়ে যাচ্ছে। গাড়ি পাওয়া যাবে কি না, সেটা ভেবে একটু আগেভাগেই বেরিয়েছি।
সকাল রাড়ে ৮ টায় অবুল হোটেল স্টপেজে দাঁড়িয়ে ছিলেন বকুল ইসলাম। তিনি মতিঝিলে একটি ব্যাংকে চাকরি করেন। তিনি বলেন, একটু পরপর বাস আসছে। কিন্তু যাত্রী ভরা। উঠতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, অবরোধ হলে ভয়-তো একটু আছেই। কখন কী হয়ে যায়, বলা যায় না। কিন্তু চাকরি করলে ঘর থেকে বের না হয়েও উপায় নেই। আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে বাস না পেলে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।
বনশ্রী-মোহাম্মদপুর রুটে চলাচল করা স্বাধীন পরিবহনের চালক আসাদুজ্জামান বলেন, গাড়ি না চালালে পেট চলবো কেমনে? মনে ভয় আছে, তারপরও বাইর হইছি। তবে অনেক গাড়ি এখনো বের হয়নি। আগে রাস্তার পরিস্থিতি দেখছে। বেলা বাড়লে গাড়ির সংখ্যা আরও বাড়বে।
ভিআইপি পরিবহনের চালকের সহকারী মালিক হাসান বলেন, গতকাল হরতাল-অবরোধ ছিল না। তাই তীব্র যানজট ছিল। আজ রাস্তা এখন পর্যন্ত ফাঁকা ফাঁকা। অফিস টাইমে যাত্রী ভালো আছে।
এদিকে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, যাতে কোনো ধরনের নাশকতা বা বিশৃঙ্খলা না হয় সেজন্য আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। হরতাল-অবরোধে আমাদের এ অবস্থান অব্যাহত থাকবে।